মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান যুদ্ধে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সীমান্তের পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করছে- এমন খবর আসার পর বাংলাদেশ সরকারের দিক থেকে আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগের উদ্যোগের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি–সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি ডঃ খলিলুর রহমান রোহিঙ্গা সংকট ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে শুক্রবার ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় এ ইঙ্গিত দিয়েছেন।
মি. রহমান আজ শনিবার বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, আরাকানের পরিস্থিতি তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ করা হবে কি না তা নিয়ে 'সুচিন্তিত' পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মিয়ানমার বিষয়ক গবেষক ও লেখক আলতাফ পারভেজ বলছেন, আরাকানে এখন যে পরিস্থিতি তাতে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ও বাণিজ্যের স্বার্থে আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ জরুরি হয়ে পড়েছে।
তবে এর ভিন্নমতও রয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর এমদাদুল ইসলাম (অবসরপ্রাপ্ত) বলছেন সীমান্ত অঞ্চল আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রণ করছে এটি যেমন সত্যি, তেমনি রাখাইনের রাজধানী এখনো সরকারের নিয়ন্ত্রণে।
"পাশাপাশি নেপিদো সরকারের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে। সে কারণে চলমান পরিস্থিতি ও কূটনৈতিক সম্পর্ক -উভয় দিক বিবেচনায় নিয়েই বাংলাদেশকে এগুতে হবে," বলেছেন তিনি।
থাইল্যান্ড ভিত্তিক মিয়ানমারের সংবাদ মাধ্যম ইরাবতী শনিবার তাদের এক প্রতিবেদনে লিখেছে যে, বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের পুরো সীমান্তই এখন আরাকান আর্মির দখলে।
মূলত গত এগারই ডিসেম্বর খবর আসে যে আরাকান আর্মি মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এই প্রথম মিয়ানমারের পুরো একটি রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে কোন বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
এই অংশের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পরই বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাফ নদীর মিয়ানমারের অংশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আরাকান আর্মি।
এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মহল থেকে আরাকান আর্মির সাথে সরকারের যোগাযোগ করার প্রসঙ্গটি আলোচনায় উঠে আসে।
14/12/24
