মাত্র দেড় মাস আগেই টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এরপর নিরাপত্তা নিয়ে এক ধরনের উত্তেজনার মধ্যেই শুক্রবার শুরু হয়েছে তাবলীগ জামাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন বিশ্ব ইজতেমা। লাখো মুসল্লি জড়ো হয়েছেন ইজতেমা ময়দানে।
প্রথম পর্বে দুই দফায় মোট ছয় দিনের জন্য ইজতেমা করছেন তাবলীগের জুবোয়েরপন্থি হিসেবে পরিচিত শুরায়ে নেজাম সমর্থকরা। আর তৃতীয় ধাপে তিন দিনের জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে তাবলীগের সা'দপন্থি অংশকে।
কিন্তু ইজতেমার মধ্যেই টঙ্গীর মাঠ আর ঢাকার কাকরাইল মসজিদের দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ এবং পাল্টা-পাল্টি কথার লড়াই দেখা যাচ্ছে। কারণ উভয় পক্ষই চান ইজতেমা মাঠের দখল।
এছাড়া কাকরাইল মসজিদ কার অধীনে থাকবে সেটা নিয়েও উত্তেজনা আছে।
এমন সময়ে তাবলীগের সা'দপন্থি অংশের নেতারা অভিযোগ করছেন, এই বছর টঙ্গীতে ইজতেমার অনুমতি দেয়া হলেও আগামী বছর থেকে তাদেরকে এই মাঠের দাবি ছেড়ে দেয়ার জন্য শর্ত দেয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে।
কিন্তু পরিস্থিতি আসলে কী? ইজতেমার মাঠ নিয়ে কি আবারও উত্তেজনা তৈরি হতে যাচ্ছে?
নিরাপত্তা নিয়ে 'ভয় নেই' বলছেন আয়োজকরা
দিনাজপুর থেকে ইজতেমায় এসেছেন ষাটোর্দ্ধ মিরাজুল ইসলাম। তাবলীগে তিনি যোগ দিয়েছিলেন ১৯৮৬ সালে।
সাম্প্রতিককালের নানা দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষ ও বিভক্তির সাক্ষী তিনি। তবে দুই পক্ষের বিরোধ থাকলেও সেটা যে ইজতেমায় নিরাপত্তা নিয়ে সংকট তৈরি করবে তেমনটা মনে করেন না তিনি।
"এখানে সবাই এসেছি দ্বীনের কাজে। আমাদের পর্ব শেষ হলে সবাই এখান থেকে নিজ নিজ এলাকায় চলে যাবো। এখানে তো গণ্ডগোলের কিছু নেই। চতুর্দিকে পুলিশ আছে। আমরা নিজেও সতর্ক আছি। সুতরাং নিরাপত্তা নিয়েই ভয় নেই," বলছিলেন মিরাজুর ইসলাম।
টঙ্গীর মাঠ ১৬০ একর জুড়ে বিস্তৃত। পুরো এলাকায় বাঁশের খুটিতে শামিয়ানা টানিয়ে আলাদা আলাদা এলাকা তৈরি করা হয়েছে।
বুধবার থেকেই সেখানে অনুসারীরা আসতে শুরু করেন। প্রতিটি পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আছে ওয়াচ টাওয়ার।
স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিসহ পুলিশপ্রধানও ইজতেমা মাঠ পরিদর্শন শেষে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন।
তাবলীগের জুবায়েরপন্থি অংশ, যারা নিজেদের পরিচয় দেন 'শুরায়ে নেজাম সমর্থক' হিসেবে, তাদের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে, আয়োজন ও নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি নেই।
"সবকিছু শান্তিপূর্ণভাবেই হচ্ছে। প্রশাসন থেকে আন্তরিক সহযোগিতা পাচ্ছি। পুলিশের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে," বলছিলেন তাবলীগের শুরায়ে নেজামপন্থীদের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।
31/01/25
