
গত ৫ই অগাস্ট শেখ হাসিনা যখন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তখন দেশের অর্থনীতি অনেকটাই বিপর্যস্ত। ব্যয় মেটাতে সরকার ঋণ করে পরিস্থিতি সামাল দেয়া চেষ্টা করছিলো।
দ্রব্যমূল্য তখন ঊর্ধ্বমুখী। বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় মানুষের নতুন চাকরির সুযোগ সংকুচিত হয়ে গেছে। এরসঙ্গে ডলার সংকটে টান পড়েছে রিজার্ভে। সরকার যে বিদেশ থেকে প্রয়োজন মতো জিনিস কিনবে, সেই সক্ষমতা ন্যূনতম পর্যায়ে চলে এসেছে। আবার বিদেশি ঋণ শোধ করতেও হিমশিম অবস্থা।
বিভিন্ন ব্যাংক থেকে সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা বড় অঙ্কের ঋণ নিয়ে শোধ না করায় খেলাপি ঋণ বেড়ে যায়। বেশ কয়েকটি ব্যাংক টাকার অভাবে গ্রাহকদের আমানত ফেরত দিতে পারছিলো না।
সব মিলিয়ে বলা যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতি গত কয়েকবছর ধরেই নানা সংকটে। কখনও রিজার্ভে ঘাটতি, কখনও জিনিসপত্রের দাম, কখনও কর্মসংস্থান- অর্থনীতির সংকট হাজির হয়েছে নানা চেহারায়।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ বলছে, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখাটা আগামী বছর অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য আরও কঠিন হবে।
বিশেষ করে তারল্য সংকট, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার?
টাকা ছাপিয়েও সবল হচ্ছে না দুর্বল ব্যাংক
বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে টাকা ছাপানোর যন্ত্র আছে। কিন্তু সরকার চাইলেই ইচ্ছেমতো টাকা ছাপায় না। কারণ তাহলে বাজারে টাকার সরবরাহ বাড়বে। এতে টাকার মূল্য কমে যাবে, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে। বেশি দামে কিনতে হবে জিনিসপত্র।
কিন্তু এরপরও নিরেট অর্থনৈতিক নীতির বাইরে গিয়েও সরকার টাকা ছাপিয়ে থাকে।
এর আগে, আওয়ামী লীগ সরকার টাকা ছাপিয়ে ব্যয় নির্বাহের চেষ্টা করেছে। শেষ সময়ে এসেও তারা টাকা ছাপিয়ে ব্যয় নির্বাহের চেষ্টা করেছে।
অর্থ উপদেষ্টা সম্প্রতি জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ছাপিয়েছে।
কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারও সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে বিভিন্ন ব্যাংককে সহায়তা দিয়েছে। যার মূল কারণ ঐসব ব্যাংকে তারল্য সংকট বা টাকার সংকট।
শ্রীনগর,মুন্সীগঞ্জ
০৩/০১/২৫ইং