বাংলাদেশ, আলবেনিয়া ও জাম্বিয়া, এই তিন দেশের জন্য উন্নয়ন সহযোগিতা বন্ধ করতে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ড সরকার। সুইস সরকারের ফেডারেল কাউন্সিলের এক বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, সরকারের উন্নয়ন সহযোগিতা কাটছাঁটের বাস্তবায়ন করতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহেই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস সুইজারল্যান্ডে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক (ডব্লিউইএফ) সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন।
যদিও অর্থায়ন বন্ধের মতো সিদ্ধান্তের প্রক্রিয়া আরও আগে থেকে শুরু করা হয়। এমন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের জন্য বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন।
সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র পিয়ের-আলাঁ এল্টশিঙ্গার লিখিত এক বক্তব্যে বিবিসিকে জানিয়েছেন, "আগামী চার বছরের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা কর্মসূচি ধাপে ধাপে বন্ধ করা হবে এবং ২০২৮ সালের শেষে বাংলাদেশ আর সুইস উন্নয়ন সহযোগিতার (SDC) অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত দেশ থাকবে না''।
২৩ শে জানুয়ারী, ২০২৫ তারিখে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ৫৫তম বার্ষিক বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সভায় বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস
কেন এই সিদ্ধান্ত?
সুইস সরকারের সংসদের বাজেট কমানোর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল ডিসেম্বর মাসের শেষদিকে। ২০২৫ সালের বাজেট থেকে ১১০ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ এবং ২০২৬-২৮ অর্থবছরের জন্য ৩২১ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সরকার।
২৯শে জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সুইস ফেডারেল কাউন্সিল সংসদের গৃহীত উন্নয়ন সহযোগিতার বাজেট কাটছাঁটের বাস্তবায়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে জানানো হয়।
২০২৮ সালের মধ্যে সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশসহ তিনটি দেশে দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ করবে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ২০২৫ সাল থেকেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় অর্থায়ন বন্ধ করা হবে, যেমন জাতিসংঘের জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (UNESCO), জাতিসংঘের এইডস কর্মসূচি (UNAIDS) ও গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন (GPE)।
জাতিসংঘের আরও বেশ কিছু সংস্থা, বিভিন্ন সুইস বেসরকারি সংস্থা (NGO), আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ব্যাংক ও অভিবাসন সংক্রান্ত আন্তঃবিভাগীয় তহবিলেও ধাপে ধাপে কাটছাঁট করা হবে। এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে সুইস ফেডারেল কাউন্সিলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।
সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল ডিপার্টমেন্ট অফ ফরেন অ্যাফেয়ার্সের (পররাষ্ট্র দপ্তর) মুখপাত্র মি. এল্টশিঙ্গার বিবিসিকে জানিয়েছেন, এমন সিদ্ধান্তে "বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একই মানদণ্ড প্রয়োগ করা হয়েছে, যেটি অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।"
"এই মানদণ্ডের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে—বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রেক্ষাপটে সুইস উন্নয়ন সহযোগিতার (SDC) বিশেষ অবদান, সুইজারল্যান্ডের দীর্ঘমেয়াদি পররাষ্ট্র নীতি (যার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত) এবং স্থানীয় চাহিদা"।
মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিকোণ থেকে এই মূল্যায়ন করা হয়েছে। বক্তব্যে আরও বলা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন ইতিবাচক ছিল। বর্তমান সংকটের আগে দেশটি রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অগ্রগতি করছিল।
01/02/25

