শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল ইউনিয়নের দক্ষিণে পদ্মা নদীর বয়াতির চরে একটি স্কুলের দাবীতে মানববন্ধন হয়েছে। শনিবার বিকাল ৪টার দিকে চরে বসবাসকারী পরিবারের লোকজন এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন।
দেখা যায়, ভাগ্যকুল মূল ভূ—খন্ড থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দক্ষিণে পদ্মা নদীর মাঝে অবস্থিত চাঁদগাও চর। যা নুরু বয়াতির চর হিসেবে বেশী পরিচিত। প্রায় ৪ দশক আগে জেগে উঠা কয়েক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এই চরে এখন বসবাস করছে প্রায় ৪ শতাধিক পরিবার। চার শতাধিক পরিবার।
এসব পরিবারের প্রধান আয়ের উৎস নদীতে মাছ শিকার করা। মাধ্যমে। এখানে বিদ্যালয় ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না থাকায় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এখানে ৫ থেকে ১৪ বছরের শিশুর রয়েছে আড়াই শতাধিক। তাদের মধ্যে মাত্র দুজন নদী পেরিয়ে ভর্তি হয়েছে ভাগ্যকুল মান্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বাকীরা স্কুলে যেতে পরছেন জানিয়েছেন চরে বসবাসকারীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভাগ্যকুল রাইসা গ্রন্থাগারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মৃধা প্রায় দুই বছর আগে এ চরে ঘুরতে এসে শিক্ষার আলো বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে ভাবতে শুরু করেন।
তিনি একটি ছোট ঘর তুলে সেখানে পাঠদানের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ভাগ্যকুল থেকে চরে গিয়ে পাঠদানের মতো শিক্ষক না পাওয়ায় তার উদ্যোগ থেমে যায়। তারপরও সুজন মৃধা হাল ছাড়েননি। তার মতো মানসিকতার কয়েকজনকে খুজে নেন। চরে শিক্ষার আলো ছড়ানোর প্রস্তাব করতেই তারা রাজি হয়ে যান। এবার চর থেকেই বের করেন অক্ষরজ্ঞান প্রদাণে সক্ষম ৪ নারীকে। আবার নতুন করে পথচলা শুরু। এর সূত্র ধরে গত শনিবার বিকালে বর্ণমালা পাঠশালার উদ্বোধন হয় নুরু বয়াতির চরে।
সেখানে উপস্থিত হন নারী পুরুষ শিশুসহ প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ। তারা দাবী তুলেছেন চরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন লেখক মুজিব রহমান, শ্রীনগর প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম শ্যামল, কোষাধক্ষ্য শফিকুল ইসলাম, উদ্যোক্তা সুজন মৃধা, হোসাইন রাজ্জাক নাঈম, আব্দুল্লাহ আল—মুনির প্রিন্স, রিয়াজুল ইসলাম বাবু, সান্দ্র মোহন্ত, সাইফুল মৃধা, বিল্লাল হোসেন, সুদীপ্ত সাহা বাঁধন, জহিরুল ইসলিম মিশু, আজিম খান, তৌহিদুল ইসলাম নয়ন, সিয়াম হাওলাদার, ওমর হোসেন রাহাদ, সিরাজুল ইসলাম মিরাজুল, মো. হাসান প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিশুদের হাতে বই, খাতা, কলম, পেন্সিল, রাবার, চললেট তুলে দেওয়া হয়। চরের বাসিন্দারা প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের দাবীতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। এ সময় চরের প্রথম বাসিন্দা নুরু বয়াতি বলেন, দিন যত যাচ্ছে চরে বাসিন্দার সংখ্যাও বাড়ছে।
৪ শতাধিকের অধিক পরিবার সবাই নদী ভাঙ্গনের শিকার। এখারকার শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নদীর মাঝে হওয়ায় তারা কোন সরকারি সুযোগ সুবিধাও পাননা। শিক্ষার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চিকিৎসা সেবার জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করা জরুরী হয়ে পরেছে।
মো:ফারুক খান
শ্রীনগর,মুন্সীগঞ্জ
১৫/১১/২৫ইং

